"আজ থেকে তিরিশ বছর আগে সিলেটের মীরাবাজারের বাসায় এক গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল, দেখি মশারির ভেতর ঠিক আমার চোখের সামনে আলোর একটা ফুল ফুটে আছে। বিস্ময়, ভয় ও আনন্দে আমি চেঁচিয়ে উঠলাম- এটা কি, এটা কি?
বাবা জেগে উঠলেন, মা জাগলেন, ভাইবোনেরা জাগল। বাবা আমার গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন, জোছনার আলো ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে মশারির গায়ে পড়েছে। ভেন্টিলেটরটা ফুলের মত নকশা কাটা। কাজেই তোমার কাছে মনে হচ্ছে মশারির ভেতর আলোর ফুল। ভয়ের কিছু নেই, হাত বাড়িয়ে ফুলটা ধর।
আমি হাত বাড়াতেই সেই আলোর ফুল আমার হাতে উঠে এল কিন্তু ধরা পড়ল না। বাকি রাতটা আমার নির্ঘুম কাটল। কতবার সেই ফুল ধরতে চেষ্টা করলাম- পারলাম না।
সৌন্দর্যকে ধরতে না পারার বেদনায় কাটল আমার শৈশব, কৈশোর ও যৌবন।
আমি জানি সম্ভব না, তবু এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি যদি একবার জোছনার ফুল ধরতে পারি- মাত্র একবার। এই পৃথিবীর কাছে আমার এর চেয়ে বেশী কিছু চাইবার নাই।"
-আমার ছেলেবেলা; হুমায়ূন আহমেদ
বাবা জেগে উঠলেন, মা জাগলেন, ভাইবোনেরা জাগল। বাবা আমার গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন, জোছনার আলো ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে মশারির গায়ে পড়েছে। ভেন্টিলেটরটা ফুলের মত নকশা কাটা। কাজেই তোমার কাছে মনে হচ্ছে মশারির ভেতর আলোর ফুল। ভয়ের কিছু নেই, হাত বাড়িয়ে ফুলটা ধর।
আমি হাত বাড়াতেই সেই আলোর ফুল আমার হাতে উঠে এল কিন্তু ধরা পড়ল না। বাকি রাতটা আমার নির্ঘুম কাটল। কতবার সেই ফুল ধরতে চেষ্টা করলাম- পারলাম না।
সৌন্দর্যকে ধরতে না পারার বেদনায় কাটল আমার শৈশব, কৈশোর ও যৌবন।
আমি জানি সম্ভব না, তবু এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি যদি একবার জোছনার ফুল ধরতে পারি- মাত্র একবার। এই পৃথিবীর কাছে আমার এর চেয়ে বেশী কিছু চাইবার নাই।"
-আমার ছেলেবেলা; হুমায়ূন আহমেদ